শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১৫ অপরাহ্ন
আবীর আকাশ- লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি.
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান হতবাক হয়েছেন লক্ষ্মীপুরের রামগতিতেই ৩৬ ইটভাটার ছাড়পত্র দেয়ার কথা শুনে।
তিনি বলেছেন, ঢাকার বাইরে লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে একটি এলাকাতেই ৩৬টি ইটভাট! কি ভাবে তারা এতগুলো ছাড়পত্র পেল? এত দিন পরিচালিত হলো কিভাবে? পরিবেশ অধিদপ্তরকে এর জবাব দিতে হবে। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) পরিবেশ অধিদপ্তরে বাংলাদেশ ন্যাশনাল এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান ২০২৪-২০৩০ উদ্বোধনীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এবিষয়ে কথা বলেন।
পরিবেশের ভারসম্য রক্ষায় দ্রুত সমাধানের কোন পদক্ষেপ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবেশ সহায়ক কিছু কাজ আমরা শুরু করতে পারি। ইতমধ্যে জিকজ্যাক ইটভাটাগুলোর জন্য আমরা একটা কমিটি করে দিয়েছি, তারা কমপ্লায়েন্স করছে কি না, সেটা দেখভালসহ নতুন কোনো ইটভাটার অনুমোদন বন্ধ রয়েছে। লক্ষ্মীপুরে যেন আর কোনো ধরনের ইটভাটার ছাড়পত্র দেয়া না হয়, সে বিষয়ে জেলা প্রশাসনকে সজাগ থাকতে হবে।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, এই এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানের বাস্তবায়ন যদি পাঁচ থেকে সাত বছরের মধ্যে নিশ্চিত করা যায়, তাহলে আমরা ঢাকাকে সবচেয়ে দূষিত বাতাসের নগরীর অপবাদ থেকে বের করে আনতে পারব এবং জনস্বাস্থ্যকে সুরক্ষিত রাখতে পারব।
পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। নিজস্ব জনবল দিয়ে কমিটি করতে হবে। অন্যের কমিটিতে ঢুকে তাদের সঙ্গে মিশে গেলে হবে না। প্রমাণ ছাড়া কথা বলা যায় না। মাতারবাড়ীসহ অন্যান্য প্রকল্পে কী মাত্রায় পরিবেশ দূষণ করছে তার প্রতিবেদন চাই। প্রতিবেদন জনগণের সামনে প্রকাশ করতে চাই।’
পরিবেশদূষণের কারণগুলোর বিষয়ে তিনি আরও বলেন, গ্রামে গোবর পুড়িয়ে যে গৃহস্থালির রান্না হয়, সেখান থেকে দূষণ হয়। বাংলাদেশের অনেক নারী এই দূষণের কারণে মারা যায়। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, ডিজেলচালিত জেনারেটর, ইটভাটা, সিমেন্ট ফ্যাক্টরি, আয়রন স্টিল মিল, যানবাহন, মেডিসিন বর্জ্য থেকে দূষণ হচ্ছে। আমরা এখনো রিফাইনারি স্ট্যান্ডার্ড থেকে পিছিয়ে আছি। তুলনামূলক ভালো পরিবেশের জন্য তো আমরা কনস্ট্রাকশন, রোড ডাস্ট, ব্রিকস, সিমেন্ট এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারি। কিছু কিছু জায়গায় এমনিতেই নিয়মিত কাজ করতে পারি। এসব করতে তো আমাদের প্রকল্পের জন্য বসে থাকার দরকার নেই।
তিনি আরও বলেন, বায়ুদূষণ নিয়ে ইতিপূর্বে যেসব কাজ হয়েছে, সেগুলো নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাই আমরা সেসব কাজ করব, সেখানে কত টাকা থাকবে, কোন খাতে কত টাকা ব্যয় হবে, তা স্পষ্ট করে থাকতে হবে। এ জন্য এটি দেখভালে আগেই কমিটি করে দেওয়া হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ড. আব্দুল হামিদের সভাপতিত্বে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ।